Connect with us

ঢালিউড

‘আমাদের আসল লড়াই এই সেন্সর প্রথা সংস্কার করা’

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (ছবিঃ ফেসবুক)

সেন্সর বোর্ড সংস্কার করে রেটিং সিস্টেম চালুর দাবি জানালেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেন্সর বোর্ড সংস্কার নিয়ে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের দারুণ ফিল্মমেকার আছে অনেক, দর্শকও আছে। এবার আপনারাও যোগ দেন আমাদের সাথে, প্রিয় নীতিনির্ধারক ভাই ও বোনেরা।’

সাড়ে তিন বছর ধরে সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকা নিজের পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’-এর মুক্তি দ্রুত নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে ফারুকী পরামর্শ দিয়েছেন, ‘সেন্সর বোর্ড সংস্কার করে রেটিং সিস্টেম চালু করেন।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর মন্তব্য, ‘শিল্পকর্ম হইতেছে হেডলাইটের মতো, প্রিয় জনাব। তার আলোতে আপনারে হয়তো কখনো কখনো কোনো গিরিখাদ, অসঙ্গতি, বিপদ দেখে ফেলতে হয়। এখন আপনি যদি হেডলাইট অফ (বন্ধ) কইরা ভাবেন বিপদ দূর করা গেছে, তাইলে আপনি আসলে সম্মুখের খাদে পড়ার রাস্তাটা ওপেন করতেছেন (খুলছেন)। সুতরাং হেডলাইট বন্ধ করবেন না, জনাব।’

মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি করার দৃশ্যকে কেন্দ্র করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা দ্রুত তুলে নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন ফারুকী। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা জানি, আমাদের আসল লড়াই এই সেন্সর প্রথা সংস্কার করা!’

নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসের সঙ্গে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে কাঁটাতার দেওয়া মঞ্চে বক্তব্য রাখার কয়েকটি স্থিরচিত্র শেয়ার করেছেন ফারুকী। ‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার, ‘শনিবার বিকেল’কে সেন্সর ছাড়পত্র দেওয়াসহ ৫ দফা দাবি জানাতে বিভিন্ন প্রজন্মের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা এখানে সমবেত হন। ‘হাওয়া’ ও ‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্র নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনের শিরোনাম ছিলো ‘বাংলা চলচ্চিত্র বা কনটেন্টে সেন্সরশিপের খড়গ: গল্প বলার স্বাধীনতা চাই’।

গত ১৭ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বন অধিদফতরের পরিদর্শক নারগিস সুলতানা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তাদের অভিযোগ, গত ২৯ জুলাই মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাওয়া’ সিনেমায় পাখিকে খাঁচাবন্দি করে রাখার একাধিক দৃশ্য রয়েছে। এছাড়া দেখানো হয়েছে প্রধান চরিত্র চাঁনমাঝি পাখির মাংস খাচ্ছেন। এ কারণে নির্মাতার কাছে ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। তবে আদালত মামলাটির বিষয়ে এখনো কোনো আদেশ দেয়নি।

অন্যদিকে ২০১৯ সালে সেন্সর বোর্ডের সনদ পাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও এখনো আটকে আছে ‘শনিবার বিকেল’। অথচ সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা এর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ফেস্টিভ্যালে সমালোচক পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে এই সিনেমা। এছাড়া মিউনিখ, সিডনিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছে এটি। দেশের ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’ হতে পারে এমন আশঙ্কায় সিনেমাটির মুক্তি আটকে দেয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। বিষয়টি এখন আপিল বিভাগে রয়েছে।

জাজ মাল্টিমিডিয়া, ছবিয়াল ও ট্যানডেম প্রোডাকশন প্রযোজিত ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ১২টি দেশের অভিনয়শিল্পী। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশের জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মামুনুর রশীদ, ভারতের পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ফিলিস্তিনের ইয়াদ হুরানি, ইউরোপের এলি পুসো, সেলিনা ব্ল্যাক প্রমুখ।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ