Connect with us

ওয়ার্ল্ড সিনেমা

মেহজাবীনের ‘প্রিয় মালতী’ কায়রো উৎসবে

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

‘প্রিয় মালতী’তে মেহজাবীন চৌধুরী (ছবি: ফ্রেম পার সেকেন্ড’

অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘সাবা’ টরন্টো, বুসানসহ বিভিন্ন উৎসবে অংশ নিয়েছে। এবার তার দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’ নির্বাচিত হলো ৪৫তম কায়রো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অফিসিয়াল সিলেকশনে। উৎসবের ওয়ার্ল্ড সিনেমা শাখায় এর বিশ্ব প্রিমিয়ার হবে।

আফ্রিকা ও আরব বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাচীন উৎসবের মধ্যে অন্যতম কায়রো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। গত ৪ নভেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচিত সিনেমার তালিকা প্রকাশ করেছে আয়োজকরা। মিসরের কায়রো শহরের কায়রো অপেরা হাউসে আগামী ১৩ নভেম্বর শুরু হয়ে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এবারের আসর। এতে অংশ নেবেন বিশ্বের নামি-দামি নির্মাতা, প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পীরা।

‘প্রিয় মালতী’র মাধ্যমে সিনেমা পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন শঙ্খ দাসগুপ্ত। কায়রো উৎসবে নিজের সিনেমা নির্বাচিত হওয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত তিনি।

শঙ্খ জানান, কায়রোতে ‘প্রিয় মালতী’র চারটি প্রদর্শনী রয়েছে। এরমধ্যে দুটিতে থাকবেন উৎসবে আসা দর্শকরা। এছাড়া সাংবাদিক ও বিচারকদের জন্য ১টি করে প্রদর্শনী হবে। প্রতিটির শুরু ও শেষে থাকবে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। উৎসবের এসব অভিজ্ঞতা নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এই নির্মাতা।

‘প্রিয় মালতী’তে মেহজাবীন চৌধুরী (ছবি: ফ্রেম পার সেকেন্ড’

‘প্রিয় মালতী’র ইংরেজি নাম রাখা হয়েছে ‘হুইসপারস অব অ্যা থার্স্টি রিভার’। গল্প লেখার পাশাপাশি এটি পরিচালনা করেছেন শঙ্খ দাসগুপ্ত। তার সঙ্গে মিলে চিত্রনাট্য লিখেছেন আবু সাইদ রানা। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সিনেমাটির কাজ শুরু হয়।

শঙ্খ দাসগুপ্ত বলেন, ‘যাপিত জীবনের গল্প আছে এই সিনেমায়। ফলে দর্শকরা সহজেই সম্পৃক্ত হতে পারবেন। আমার দর্শনের অনেক কিছুই প্রতিফলিত হয়েছে গল্পে। তাছাড়া এতে অন্যরকম রাজনীতির প্রসঙ্গ আছে। আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতির বাইরে নয় আর্ট।’

মেহজাবীন চৌধুরী (ছবি: ফ্রেম পার সেকেন্ড’

‘প্রিয় মালতী’তে মালতী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। সম্মানজনক কায়রো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নিজের সিনেমা নির্বাচিত হওয়া অনেক বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন তিনি। গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এই তারকা, “আমাদের পুরো টিমের জন্য খুবই আনন্দের, গর্বের ও বিশাল সাফল্যের ঘটনা এটি। আমরা কখনও ভাবিনি বাংলাদেশের গল্পের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত ‘প্রিয় মালতী’ আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রাসঙ্গিক হবে। গল্পে অন্যরকম একটি প্লট থাকায় এই সিনেমায় কাজ করেছি। তাছাড়া ইউনিট খুবই দারুণ ছিলো। বিদেশের দর্শকরা সিনেমাটি দেখবে ভেবে খুব ভালো লাগছে।’

মেহজাবীন যোগ করেছেন, ‘দেশের দর্শকদের সিনেমাটি দেখাতে পারলে সবচেয়ে খুশি হবো। বিশ্ব প্রিমিয়ারের পর যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য সিনেমাটি দেশের সিনেমাহলে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করবো। সবাই আমার প্রতিটি কাজে সবসময় পাশে ছিলেন, একইভাবে ‘প্রিয় মালতী’ মুক্তির সময় সবাইকে পাশে চাইবো। আশা করি, সিনেমাটি দর্শকেদর ভাবাবে।”

মেহজাবীন চৌধুরী (ছবি: ফেসবুক)

ছোট পর্দায় দাপিয়ে বেড়ানোর পর সিনেমায় নাম লিখিয়েই একের পর এক আন্তর্জাতিক উৎসবে যাচ্ছেন মেহজাবীন। তার কথায়, ‘কাজ করার সময় তো আর উৎসবের কথা মাথায় থাকে না। তবে পরিশ্রম করি বলে আন্তর্জাতিক উৎসবে নিজের সিনেমা নির্বাচিত হলেন খুব ভালো লাগে।’

মেহজাবীন ছাড়াও ‘প্রিয় মালতী’তে অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী, আজাদ আবুল কালাম, শাহজাহান সম্রাট, রিজভী রিজুসহ অনেকে। সিনেমাটি দেশের দর্শকরা কবে দেখতে পাবেন, তা চূড়ান্ত করে বলেননি সংশ্লিষ্টরা। সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফ্রেম পার সেকেন্ড।

মেহজাবীন চৌধুরী (ছবি: ফেসবুক)

এদিকে মাকসুদ হোসেন পরিচালিত ‘সাবা’ ইন্দোনেশিয়ার অল্টারনেটিভা ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস অ্যান্ড ফেস্টিভ্যালে মনোনীত হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার যোগকার্তা শহরে থাকছে এই উৎসব।

২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে স্থান পায় ‘সাবা’। গত ৪ অক্টোবর ২৯তম বুসান আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘অ্যা উইন্ডো অন এশিয়ান সিনেমা’ শাখায় এর এশিয়ান প্রিমিয়ার হয়েছে। এরপর ৬ অক্টোবর ও ৯ অক্টোবর ছিলো আরো দুটি প্রদর্শনী।

মেহজাবীন চৌধুরী (ছবি: ফেসবুক)

৪৯তম টরন্টো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ডিসকোভারি প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয় ‘সাবা’। টরন্টোর স্কটিয়াব্যাংকে গত ৭ সেপ্টেম্বর এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়। একই ভেন্যুতে ৯ সেপ্টেম্বর ও ১৪ সেপ্টেম্বর এই সিনেমার আরও দুটি টিকিট প্রদর্শনী হয়েছে। সবকটি’তে অংশ নিয়েছেন মেহজাবীন, অভিনেতা মোস্তফা মন্ওয়ার ও পরিচালক মাকসুদ হোসেন।

‘সাবা’য় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেহজাবীন। সিনেমাটির সহ-প্রযোজক তিনি। ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের গল্পটিতে দেখা যায়, ২৫ বছর বয়সী সাবা ঢাকায় মাকে নিয়ে থাকে। তার মা শিরিন একটি দুর্ঘটনার পর শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। সংসারের হাল ধরতে চাকরি করে সাবা। এদিকে শিরিন হার্ট অ্যাটাক করলে তার চিকিৎসার ব্যয় মেটানো সাবার জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। মায়ের অস্ত্রোপচারের জন্য টাকা কীভাবে জোগাড় করবে সেসব ভেবে দিশেহারা হয়ে যায় সাবা। এরমধ্যে মেয়েটির জীবনে আশার আলো হয়ে আসে অঙ্কুর।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ