Connect with us

গান বাজনা

‘চলো নিরালায়’ নিয়ে সবার প্রশংসা আমৃত্যু মনে থাকবে: অয়ন চাকলাদার

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

অয়ন চাকলাদার

অয়ন চাকলাদার (ছবি: ফেসবুক)

‘পরাণ’ সিনেমার গান ‘চলো নিরালায়’ শ্রোতামহলে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। গানটি এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে। ইউটিউবে লাইভ টেকনোলজিসের অফিসিয়াল চ্যানেলে গানটির ভিউ ২৫ লাখ পেরিয়ে গেছে। এছাড়া ফেসবুক ও টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি ভাইরাল। সাধারণ শ্রোতাদের পাশাপাশি তারকাদের মন জয় করেছে জনি হকের কথা এবং অয়ন চাকলাদার ও আতিয়া আনিসার গাওয়া গানটি। ‘চলো নিরালায়’ গানের সুর-সংগীত নাভেদ পারভেজের। সিনেমাওয়ালা নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় কথা বলেছেন সংগীতশিল্পী অয়ন চাকলাদার।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘চলো নিরালায়’ সিনেমায় আপনার প্রথম গান। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকালেন!
অয়ন চাকলাদার: গানটি আমার জীবনে অবশ্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিনোদন অঙ্গনেও গানটি অনেক হিট। বিনোদন অঙ্গনের অনেক বড় বড় মানুষ এই গানটির জন্য আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাই আমার কাছে এটি আমৃত্যু স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অয়ন চাকলাদার

অয়ন চাকলাদার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘পরাণ’ সিনেমার গানটির কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আপনি আর আতিয়া আনিসাই কি সুরকার নাভেদ পারভেজের প্রথম পছন্দ ছিলেন?
অয়ন চাকলাদার: নাভেদ ভাইয়ের প্রথম পছন্দ আমি ও আনিসাই ছিলাম। কারণ গানটির প্রথম ডেমোতে শুধু আমারই কণ্ঠ ছিলো। নাভেদ ভাইয়ের গাইড ভয়েজ শুনে আমিই প্রথম কণ্ঠ দেই এতে। আর প্রথম গায়িকার কণ্ঠটি আনিসারই ছিলো। এমন হয়নি যে, অন্য কারও গাওয়ার পর আমরা গেয়েছি। আমরাই এই গানটি প্রথম গেয়েছি। তাই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, আমরাই নাভেদ ভাইয়ের প্রথম পছন্দ ছিলাম।

অয়ন চাকলাদার

অয়ন চাকলাদার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘চলো নিরালায়’ অভাবনীয় জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এতটা কি আশা করেছিলেন?
অয়ন চাকলাদার: সত্যি বলতে গানটি নিয়ে আমি আশাবাদী ছিলাম। তিন বছর আগে আমার কণ্ঠে গানটির রেকর্ডিং হয়। এরপর আমার বাসার সবারই পছন্দ হয় এটি। আমার বাবা-মা, ভাই থেকে শুরু করে কাজিন অদ্রির পছন্দের গান ‘চলো নিরালায়’। অদ্রি এখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ও তখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। ওর তখনই এই গানটি বেশ পছন্দের ছিলো। আমার বাবার বয়স ৭০ বছরের কাছাকাছি। তার গানের রুচি কিন্তু একেবারেই ভিন্ন। তার কাছেও ‘চলো নিরালায়’ ভালো লেগেছে। অদ্রির মতো কিশোরী এবং বাবার মতো বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের ভালো লেগেছে বলে আমার মনে হয়েছিলো, গানটি সব প্রজন্মের শ্রোতার কাছে ভালো লাগতে পারে।

কামরুন্নাহার নামে আমার এক মামী ছিলেন। গত বছর করোনায় মারা গেছেন তিনি। মামী গানটি আমার কাছে চেয়ে নিয়েছিলেন। গানটি তাকে এই শর্তে দিয়েছিলাম যেন এটি কোথাও ফাঁস হয়ে না যায়। তাকে জানাই, গানটি ফাঁস হলে আমার অনেক সমস্যা হবে। তিনি এটি শুধু নিজে শুনবেন বলে কথা দেন। তিনি গানপাগল মানুষ ছিলেন। মামীকে বলেছিলাম, সিনেমায় আমার গানটি নাও থাকতে পারে, তাই গানটি আগেই কাউকে শোনাবেন না। তিনি গোপনীয়তা রক্ষা করবেন জানিয়ে গানটি নিয়েছিলেন। তিনি নিয়মিত গানটি শুনতেন। ‘চলো নিরালায়’ তার খুব পছন্দ ছিলো। তাই এটা আমার জন্য একইসঙ্গে আনন্দের ও কষ্টের। কারণ মামী আর পৃথিবীতে নেই। তিনি আমার গানটির মুক্তি দেখে যেতে পারেননি কিংবা এর সাফল্যও দেখে যেতে পারেননি।

অয়ন চাকলাদার

অয়ন চাকলাদার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: সাধারণ শ্রোতা থেকে শুরু করে তারকারা গানটি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। এরমধ্যে আলাদাভাবে ভালো লাগার মতো কোনটি?
অয়ন চাকলাদার: যেসব তারকার কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছি তাদের মধ্যে আলাদাভাবে শুধু একজনের কথা বললে হবে না। কয়েকজনের কথা বলতেই হবে। তাদের মধ্যে আছেন আমাদের সবার প্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ভাই। তিনি আমাকে শুভকামনা জানিয়ে বলেছেন, গানটি খুব ভালো লেগেছে তার। তার প্রশংসা খুব স্পেশাল। আসিফ আকবর ভাই খুবই উচ্ছ্বসিত। আসিফ ভাই আমাকে অনেক স্নেহ করেন। তিনি আমার কণ্ঠের প্রশংসা বহু আগে থেকে করেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘অয়ন তুমি খুব ভালো গাও। তোমার কণ্ঠ ইউনিক, তোমার কণ্ঠের জুতসই ব্যবহার হচ্ছে না।’ তাই আমার এই গানটি সাফল্য পাওয়ায় আসিফ ভাই খুব খুশি। ইমন সাহা দাদা আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সবার প্রিয় অভিনেত্রী মুনিরা মিঠু আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছেন, আমার গায়কী তার বেশ পছন্দ হয়েছে। অভিনেতা আজিজুল হাকিমের স্ত্রী জিনাত হাকিম ম্যামের কাছেও গানটি বেশ ভালো লেগেছে। আসলে সবার মন্তব্যই আমার জীবনে আমৃত্যু স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অয়ন চাকলাদার

অয়ন চাকলাদার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘চলো নিরালায়’ কি আপনার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা কাজ মনে করেন?
অয়ন চাকলাদার: ক্যারিয়ারের সেরা কাজ আসলে বলতে চাই না, তাহলে আমার আগের গাওয়া গানগুলোকে একটু কষ্ট দেওয়া হবে। কারণ আমার ক্যারিয়ারের প্রতিটি গানই গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, আমার গাওয়া প্রতিটি গানই সিঁড়ির এককটি ধাপ। তবে যদি জানতে চান আমার গাওয়া গানের মধ্যে কোনটির জন্য অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি, সেটি অবশ্যই ‘চলো নিরালায়’। প্রতিদিন সাক্ষাৎকার দেওয়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রোতাদের সাড়া, মানুষের ভালোবাসা পাওয়া; সব মিলিয়ে এরকম পরিস্থিতি আমার জীবনে আগে কখনও আসেনি। অবশ্যই এটি আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।

‘চলো নিরালায়’ আমার জীবনে অন্যতম একটি সেরা কাজ হয়ে থাকবে এবং অবশ্যই যেহেতু একটি সিনেমার গান তাই এর প্রতি আমার ভালো লাগা ও ভালোবাসা অন্য গানগুলোর চেয়ে একটু ভিন্ন। এটি সিনেমার জন্য আমার গাওয়া প্রথম গান। তারকা এবং সাধারণ শ্রোতাদের কাছে অল্প সময়ে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এটি। এজন্য ‘চলো নিরালায়’ আমার সংগীত জীবনে অনন্য জায়গা নিয়ে থাকবে।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ