ঢালিউড
নাটকে গান গাওয়াসহ হুমায়ুন ফরীদির প্রথম যা কিছু
তারকাদের তারকা বিশেষণটি বাংলাদেশের হাতেগোনা যে কয়েকজনের সঙ্গে মানায়, কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি তাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর অসামান্য অভিনয় কৌশল থেকে শিখে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীরা। মরণোত্তর একুশে পদক পাওয়া হুমায়ুন ফরীদি মঞ্চনাটক, টেলিভিশন ও সিনেমা জগতের অন্যতম সেরা অভিনেতা ছিলেন। নায়ক-খলনায়ক দুই চরিত্রেই তিনি ছিলেন বর্ণিল। আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) তাঁর প্রয়াণ দিবসে ফিরে দেখা যাক গুণী মানুষটির প্রথম কিছু ঘটনা।
প্রথম অভিনয়
১৯৫২ সালের ২৯ মে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরতে হয়েছে তাঁকে। ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জে মহল্লায় ‘এক কন্যার জনক’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন তিনি।
প্রথম মঞ্চনাটক
১৯৬৫ সালে হুমায়ুন ফরীদির কৈশোর কাটে মাদারীপুরে। সেখানে কলেজের বার্ষিক নাট্যোৎসবে ‘মুখোশ যখন খুলবে’ নামের নাটকে অভিনয় করেন। মাদারীপুরের নাট্যাঙ্গনে হুমায়ুন ফরীদির গুরু ছিলেন বাশার মাহমুদ। তার নির্দেশনায় শিল্পী নাট্যগোষ্ঠীতে যুক্ত হন। সংগঠনটির প্রযোজনা কল্যাণ মিত্রের ‘ত্রিরত্ন’ নাটকে রত্ন চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম দর্শকদের সামনে আসেন তিনি।
প্রথম নির্দেশনা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। ১৯৭৬ সালে জাবি’তে অনুষ্ঠিত নাট্যোৎসবের অন্যতম সংগঠক ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। তখন ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামের একটি নাটক রচনা ও নির্দেশনার পাশাপাশি এতে অভিনয় করেন তিনি। সেই উৎসবের মাধ্যমে তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিতি পান। এর সুবাদে ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের সঙ্গে তার দারুণ সম্পর্ক ছিল। রাজস্থানি গল্প নিয়ে ঢাকা থিয়েটারের ‘ভূত’ নাটকটি নির্দেশনা দেন তিনি।
ঢাকা থিয়েটারে প্রথম অভিনয়
ঢাকা থিয়েটারের মাধ্যমে হুমায়ুন ফরীদির মঞ্চযাত্রা শুরু হয়। শুরুতে চা আনা ও কস্টিউম পরিয়ে দেওয়া পর্যন্ত ছিলো তাঁর কাজ। পরে সেলিম আল দীনের ‘চরকাঁকড়ার ডকুমেন্টারি’ নাটকের প্রোডাকশনে যুক্ত ছিলেন। এরপর তার রচনায় ‘সংবাদ কার্টুন’ নাটকে স্বল্প উপস্থিতির একটি চরিত্রে সুযোগ পান তিনি। সেলিম আল দীনের ‘শকুন্তলা’ নাটকে তক্ষক ছিলো ঢাকার মঞ্চে তার প্রথম পূর্ণাঙ্গ চরিত্র। ঢাকা থিয়েটারে তাঁর অভিনীত নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘ফণিমনসা’, ‘কেরামত মঙ্গল’।
প্রথম টিভি নাটক
১৯৯২ সালে মঞ্চের গণ্ডি পেরিয়ে টেলিভিশনে পা রাখেন হুমায়ুন ফরীদি। বাংলাদেশ টেলিভিশনে তাঁর অভিনীত প্রথম নাটক আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’। শহীদুল্লা কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশনায় বিটিভির ধারাবাহিক ‘সংশপ্তক’ নাটকে ‘কান কাটা রমজান’ চরিত্রটি দেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পেলে হুমায়ুন ফরীদি আলোচনায় আসেন।
প্রথম গান গাওয়া
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘সমুদ্রে গাঙচিল’ নাটকে ‘দেখা হয় তবুও’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছেন হুমায়ুন ফরীদি। বিটিভির স্টুডিওতে এর রেকর্ডিং হয়। এটাই ছিলো তাঁর প্রকাশিত প্রথম গান। এর কথা লিখেছেন গীতিকবি নজরুল ইসলাম বাবু, সুর ও সংগীতায়োজনে মো. শাহনেওয়াজ। নাটকে গানটি প্রচারের পর দেশজুড়ে সাড়া পড়ে। মোহন খানের রচনায় নাটকটি প্রযোজনা করেন জিয়া আনসারী। নাটকটিতে তিনি ছাড়াও অভিনয় করেন আফজাল হোসেন ও সুবর্ণা মুস্তাফা।
প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা
১৯৮৪ সালে তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’র মাধ্যমে প্রথমবার সিনেমার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান হুমায়ুন ফরীদি। কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা অবলম্বনে সাজানো হয় এটি। এর গল্প ষাটের দশকে প্রগতিশীল সংগঠনের কর্মীদের ওপর পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্যে হুলিয়া বুকে নিয়ে ঘরছাড়া এক তরুণকে কেন্দ্র করে। কবিতার প্রধান চরিত্র খোকার ভূমিকায় প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান আসাদুজ্জামান নূর। এতে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে দেখা গেছে হুমায়ুন ফরীদিকে। ২৯ মিনিট দৈর্ঘ্যের হুলিয়ায় আরো আছেন আলী যাকের, রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, ইনামুল হক, লিলি চৌধুরী, ডলি আনোয়ারসহ অনেকে। এটি সম্পাদনা করেছেন সাইদুল আনাম টুটুল।
প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা
১৯৮৫ সালে রাষ্ট্রীয় অনুদানে প্রয়াত নির্মাতা শেখ নিয়ামত আলীর ‘দহন’ ছিলো হুমায়ুন ফরীদির প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা। এতে মুনীর চরিত্রে দারুণ নৈপুণ্যের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে বাচসাস পুরস্কার পান তিনি। এতে আরো অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ, ববিতা, শর্মিলী আহমেদ, প্রবীর মিত্র, ডলি আনোয়ার, রওশন জামিল, আবুল খায়ের, সাইফুদ্দিন, আসাদুজ্জামান নূর, সৈয়দ আহসান আলীসহ অনেকে।
সিনেমায় প্রথম খলচরিত্র
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘সন্ত্রাস’-এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করেন হুমায়ুন ফরীদি। এর মধ্য দিয়ে খলনায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়। নেতিবাচক চরিত্রে তাঁর মতো খ্যাতি পেয়েছেন খুব কমই। তার অভিনীত সিনেমার তালিকায় রয়েছে সন্ত্রাস, দহন, লড়াকু, দিনমজুর, বীরপুরুষ, বিশ্বপ্রেমিক, আজকের হিটলার, দুর্জয়, শাসন, আঞ্জুমান, আনন্দ অশ্রু, মায়ের অধিকার, আসামি বধূ, একাত্তরের যীশু, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, ভালোবাসি তোমাকে, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, প্রবেশ নিষেধ, ভণ্ড, ‘ঘাতক’, টাকার অহংকার, অধিকার চাই, মিথ্যার মৃত্যু, বিদ্রোহ চারিদিকে, মনে পড়ে তোমাকে, মাতৃত্ব, টাকা, ব্যাচেলর, জয়যাত্রা, শ্যামল ছায়া, দূরত্ব, চেহারা, আহা!, কী জাদু করিলা।
প্রথম সিনেমা প্রযোজনা
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘পালাবি কোথায়’ সিনেমাটি প্রযোজনা করেন হুমায়ুন ফরীদি। এটি মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। নারীবাদী হাস্যরসাত্মক গল্প নিয়ে সাজানো হয় এটি। নারী অধিকারের পক্ষে বার্তা দেওয়ায় এই সিনেমা প্রশংসিত হয়। এতে তাঁর পাশাপাশি অভিনয় করেছেন শাবানা, সুবর্ণা মুস্তাফা, চম্পা, আফজাল হোসেন। তাঁর প্রযোজিত একমাত্র সিনেমা এটি।
প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
‘মাতৃত্ব’ সিনেমার জন্য ২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেতা হন হুমায়ুন ফরীদি। ২০১৮ সালে মরণোত্তর একুশে পদক পান এই কিংবদন্তি অভিনেতা।
-
ছবি ও কথা1 year ago
তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের কিছু ছবি
-
বলিউড2 years ago
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে ক্যাটরিনার মধুর প্রতিশোধ!
-
নাটক2 years ago
আমেরিকায় ফুরফুরে মেজাজে মেহজাবীন-তানজিন তিশা-ফারিণ
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
বুসানে ফারুকী-তিশার সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড়
-
ঢালিউড1 year ago
রাষ্ট্রপতি সিনেমাহলে সপরিবারে ‘প্রিয়তমা’ দেখলেন
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
‘জেলার’ হিট হওয়ায় ১০০ কোটি রুপি ও বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পেলেন রজনীকান্ত
-
ঢালিউড2 years ago
শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ কলকাতার এই নায়িকা
-
ঢালিউড2 years ago
‘বিউটি সার্কাস’: এমন চরিত্রে আর অভিনয় করবো না: ফেরদৌস