প্রথম সিনেমা মুক্তির পর ৩০ হাজার বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন! বাবা বলিউডের সফল পরিচালক। নানা ছিলেন খ্যাতিমান নির্মাতা। দাদা সংগীত পরিচালনা করতেন আর দাদি গান গাইতেন। আজ (১০ জানুয়ারি) এই নায়কের ৫০তম জন্মদিন। ছবিতে জেনে নিন তার জীবনের গল্প।
১৯৭৪ সালের ১০ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাইয়ে ডান হাতে অতিরিক্ত বুড়ো আঙুল নিয়ে জন্মেছেন। খুব ছোটবেলায় তোতলা ছিলেন।
শরীরে বিরল রোগ ধরা পড়ায় চিকিৎসকেরা শঙ্কা করেছিলেন, ছেলেটি কখনও নাচতে পারবে না। এত প্রতিকূলতার পরেও অভিনেতা হিসেবে সাফল্য পেয়েছেন। বলিউডের নাচে পারদর্শী তারকাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিলো। ‘আশা’ (১৯৮০) সিনেমার শুটিংয়ে একটি গানের সুর শুনে আনন্দে নাচানাচি করছিলেন। তখন তার বয়স মাত্র ছয় বছর। সেই দৃশ্য ছেলেটিকে না জানিয়ে ক্যামেরাবন্দি করেন তার নানা জে. ওম প্রকাশ। তিনিই সিনেমাটির পরিচালক। খুশি হয়ে নাতিকে ১০০ রুপি সম্মানী দেন তিনি। পরে হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করে শত শত কোটি রুপি আয় করেছেন এই তারকা।
বাবার প্রযোজনায় ‘আপ কে দিওয়ানে’ (১৯৮০) এবং নানার পরিচালনায় ‘আস পাস’ (১৯৮১) সিনেমার একটি করে গানের দৃশ্যে দেখা গেছে তাকে। ‘ভগবান দাদা’ (১৯৮৬) সিনেমার মাধ্যমে সংলাপ বলা চরিত্রে প্রথমবার অভিনয় করেন তিনি। তখন তার বয়স ১২ বছর।
বাবার পরিচালিত ‘খুদগার্জ’ (১৯৮৭), ‘কিং আঙ্কেল’ (১৯৯৩), ‘করণ অর্জুন’ (১৯৯৫) ও ‘কয়লা’ (১৯৯৭) সিনেমায় সহকারী ছিলেন। শুটিং ফ্লোর ঝাড়ু দিতেন ও কলাকুশলীদের জন্য চা বানিয়ে আনতেন। তার চাচা সংগীত পরিচালক রাজেশ রোশন।
২০০০ সালে বাবার পরিচালনায় ‘কহো না…পেয়ার হ্যায়’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় নায়ক হিসেবে অভিষেক হয় হৃতিক রোশনের। এটি মুক্তির পর রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি। বিশেষ করে মেয়েদের স্বপ্নের নায়কে পরিণত হন। ফলে প্রতিদিনই বিয়ের প্রস্তাব পেতে থাকেন। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০ হাজার!
প্রথম সিনেমা মুক্তির ১১ মাসের মাথায় দীর্ঘদিনের প্রেমিকা সুজান খানের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন। এর ১৪ বছর পর বিচ্ছেদ হয় তাদের। তারা দুই পুত্রসন্তানের মুখ দেখেছেন।
হৃতিকের হিন্দি সিনেমার তালিকায় আছে ‘ফিজ়া’, ‘মিশন কাশ্মীর’, ‘ইয়াদেঁ’, ‘না তুম জানো না হাম’, ‘মুঝসে দোস্তি কারোগে!’, ‘ধুম টু’ (২০০৬), ‘কাবিল’ (২০১৬), ‘অগ্নিপথ’ (২০১২), ‘যোধা আকবর’ (২০০৮), ‘সুপার থার্টি’ (২০১৯), ‘গুজ়ারিশ’, ‘কোই…মিল গ্যায়া’ (২০০৩), ‘কৃষ’ (২০০৬), ‘কৃষ থ্রি’ (২০১৩), ‘জ়িন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ (২০১১), ‘কাভি খুশি কাভি গাম’ (২০০১), ‘ওয়ার’ (২০১৯), ‘ব্যাং ব্যাং’ (২০১৪) এবং ‘বিক্রম বেদা’ (২০২২), ‘ম্যায় প্রেম কি দিওয়ানি হু’ (২০০৩), ‘কাইটস’ (২০১০), ‘লক্ষ্য’ (২০০৪)।
হৃতিক রোশন নায়ক হিসেবে ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে ২৬টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এগুলোর সম্মিলিত আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৯০৮ কোটি ২০ লাখ রুপি। এরমধ্যে পাঁচটি ব্লকবাস্টার, দুটি সুপারহিট, দুটি সেমি-হিট ও তিনটি হিট।
হৃতিক রোশনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩ হাজার ১০১ কোটি রুপি। এর মাধ্যমে হিন্দি সিনেমায় সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অভিনেতাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন তিনি।
আগামী ২৫ জানুয়ারি সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ‘ফাইটার’ সিনেমায় দেখা যাবে হৃতিককে। এতে প্রথমবার তার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন দীপিকা পাড়ুকোন।