Connect with us

ওয়ার্ল্ড সিনেমা

প্রবাসী চিত্রশিল্পীর জীবন নিয়ে ফিল্ম নির্মাণে লেগেছে সাত বছর, শুটিং ঢাকা-স্পেন-চাঁদপুরে

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

(বাঁ থেকে) মুস্তাফা মনোয়ার, মনিরুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান নূর, আবুল খায়ের লিটু, রুবাইয়াত হোসেন ও আশিক মোস্তফা (ছবি: খনা টকিজ)

প্রবাসী খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলামের বর্ণিল জীবন তুলে ধরা হলো একটি ফিল্মে। এটি নির্মাণে লেগেছে সাত বছর। ঢাকা, স্পেন ও শিল্পীর পৈতৃক নিবাস চাঁদপুরে এর নাম রাখা হয়েছে ‘মনির: অ্যা পোর্ট্রেট অব অ্যান আর্টিস্ট’-এর দৃশ্যধারণ হয়েছে। এতে তার সাদামাটা জীবনের বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে।

গতকাল (২৫ জুন) ঢাকার আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ছিলো ফিল্মটির প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে মনিরুল ইসলামের শিক্ষক ও বরেণ্য শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, ‘জলরঙ হলো কবিতার মতো। অল্প কথায় অনেক কথা বলে দিতে হয়। বেশি কারিগরি হলে চলে না, বেশি পাণ্ডিত্যও খাটে না। মনির সেসব দারুণ আয়ত্ত্বে এনেছে। স্পেনে এখন তার বেশ কদর। মনিরের সাফল্য দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে।’

(বাঁ থেকে) মুস্তাফা মনোয়ার, মনিরুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান নূর, আবুল খায়ের লিটু, রুবাইয়াত হোসেন ও আশিক মোস্তফা (ছবি: খনা টকিজ)

আশিক মোস্তফা পরিচালিত ফিল্মটি প্রযোজনা করেছেন ফিল্মমেকার রুবাইয়াত হোসেন। তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা না থাকলে এই সিনেমা হতো না। দুইজন অনেক পরিশ্রম করে এটি বানিয়েছে।’

(বাঁ থেকে) মুস্তাফা মনোয়ার, মনিরুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান নূর (ছবি: খনা টকিজ)

পরিচালক আশিক মোস্তফা বলেন, ‘ফিল্মটি বানাতে গিয়ে আমাদের দারুণ সব অভিজ্ঞতা হয়েছে। একজন বড়মাপের শিল্পীকে ভীষণ সাধারণভাবে দেখেছি। রান্না ও বাজার করার মতো ব্যক্তিজীবনের বিভিন্ন প্রসঙ্গের পাশাপাশি আঁকাআঁকির তাত্ত্বিক অনেক আলাপ করেছেন খ্যাতিমান এই শিল্পী।’

প্রায় দুই দশক ধরে বইয়ের মধ্যে ছবি আঁকেন মনিরুল ইসলাম, যেগুলো বিক্রির জন্য নয়। সেসব ছবির প্রদর্শনীও করেন না তিনি। এটি অনুসন্ধান করতে গিয়েই তাকে নিয়ে ফিল্ম বানানোর আগ্রহ জন্মে বলে জানালেন পরিচালক আশিক মোস্তফা।

রুবাইয়াত হোসেন ও আশিক মোস্তফা (ছবি: খনা টকিজ)

প্রযোজক রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা শিল্পী মনিরুল ইসলামকে খুব কাছ থেকে দেখতে পেরেছি। তিনি দারুণ একজন শিল্পী মানুষ। ফিল্মটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনের পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমরা অনেক মানুষকে এটি দেখাতে চাই।’

‘মনির: অ্যা পোর্ট্রেট অব অ্যান আর্টিস্ট’ ফিল্মের প্রদর্শনীতে আরো ছিলেন সংসদ সদস্য ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, শিল্পী রফিকুন নবী, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন এবং ঢালী আল মামুন।

১৯৪৩ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন মনিরুল ইসলাম। তিনি পড়াশোনা করেছেন ঢাকার তৎকালীন আর্ট কলেজে। ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু। এর তিন বছর পর বৃত্তি নিয়ে স্পেনে পাড়ি জমান তিনি। এরপর থেকে সেখানেই বসবাস। বছরের কয়েক মাস থাকেন বাংলাদেশে।

স্পেন, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে মনিরুল ইসলামের একক ও যৌথ চিত্রপ্রদর্শনী হয়েছে। স্পেনের সম্মানসূচক ‘রয়েল স্প্যানিশ অর্ডার অব মেরিট’ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ১৯৯৭ সালে স্পেনের রাষ্ট্রীয় পদক, ২০১০ সালে স্পেনের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা ‘দ্য ক্রস অব দ্য অফিসার অব দ্য অর্ডার অব কুইন ইসাবেলা’, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে একুশে পদক ছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি পদকসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা এসেছে তার হাতে।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ