Connect with us

সিনেমা হল

বাংলাদেশেও ১৬ ডিসেম্বর থেকে ‘অ্যাভাটার’ সিক্যুয়েল

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার

দীর্ঘ ১৩ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে। বড় পর্দায় আসছে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলা জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার’ সিনেমার বহুল প্রতীক্ষিত মহাকাব্যিক সিক্যুয়েল। টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওসের পরিবেশনায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাচ্ছে ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’। একই দিন বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে এটি। ইতোমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই মাল্টিপ্লেক্সের সব শাখার কাউন্টার ও অনলাইনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।

‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমায় জলজ জগত সৃষ্টি করেছেন জেমস ক্যামেরন। ফলে এতে দেখা যাবে সাগরের নীল জলরাশির প্রাধান্য। নীল রঙা না’ভি জনগণের সঙ্গে মানুষের লড়াই হবে সমুদ্রজলে। এবারের পর্বে যুক্ত হয়েছে বেশকিছু নতুন কাল্পনিক চরিত্র।

অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার

‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমার দৃশ্য (ছবি: টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওস)

গত মে মাসে ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’-এর টিজার মুক্তির প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ১৪ কোটি ৮০ লাখ বার দেখা হয়েছে। এতেই স্পষ্ট হয়েছে যে, সিনেমাটির জন্য দর্শকরা কতটা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তাদের কৌতূহল এখন চূড়ায়। এতো বিপুল সাড়ার ফলে আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস তৈরি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বোদ্ধারা।

৮০তম গোল্ডেন গ্লোবসের সেরা সিনেমা (ড্রামা) শাখায় মনোনীত হয়েছে ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’। এছাড়া সেরা পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জেমস ক্যামেরন। বোদ্ধারা তার পরিচালনা, ভিজ্যুয়াল, আবেগের মাত্রা ও চরিত্রগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার

‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমার দৃশ্য (ছবি: টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওস)

২১৫৪ সালের পটভূমিতে নির্মিত ‘অ্যাভাটার’ সিনেমার গল্পে দেখা যায়, পৃথিবী গ্রহের শক্তির সব উৎস শেষ হয়ে এসেছে। তখন পৃথিবীর অধিবাসীদের একদল প্রতিনিধি পাড়ি জমায় ‘প্যান্ডোরা’ গ্রহে। সেখানে পৃথিবীকে বাঁচানোর মতো এক শক্তির উৎস আছে, যার নাম ‘আনঅবটেনিয়াম’। তবে তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্যান্ডোরা গ্রহের অধিবাসীরা। মানুষের মতোই বাহ্যিক আকার তাদের, কিন্তু লম্বা ও লেজ বিশিষ্ট। তারা না’ভি নামে পরিচিত। না’ভিরা নিজেদের গ্রহের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তাই শুরু হয় মানুষের সঙ্গে না’ভিদের সংঘাত।

অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার

‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমার দৃশ্য (ছবি: টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওস)

‘অ্যাভাটার’ যেখানে শেষ হয়েছিলো, সেখান থেকে ১০ বছর পর নতুন সিনেমার গল্প শুরু হবে। এতে দেখা যাবে, প্যান্ডোরার নীল অধিবাসী জ্যাক সালি ও নেইতিরি দম্পতি এখন পাঁচ সন্তানের বাবা-মা। পৃথিবী গ্রহ থেকে আসা মানুষের কারণে তাদের শান্তিপূর্ণ জীবনে সংকট নেমে আসে। সালি, নেইতিরি ও তাদের সন্তানেরা সমুদ্রের মেটকাইনা গোষ্ঠীর কাছে আশ্রয় চেয়ে দূরবর্তী অঞ্চলে সরে যায়। শত্রুদের হুমকি মাথায় নিয়ে সমুদ্রজলে বেঁচে থাকার উপায় শিখতে থাকে তারা।

যথারীতি জ্যাক সালি ও নেইতিরি চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্যাম ওয়ার্থিংটন ও জোয়ি স্যালডানা। আগের পর্বের অন্য অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ফিরছেন সিগোর্নি উইভার, স্টিফেন ল্যাং, ম্যাট জেরাল্ড, জোয়েল ডেভিড মুর, দিলীপ রাও।

কেট উইন্সলেট অভিনীত রোনাল চরিত্রটি।

সিক্যুয়েলে নতুন যুক্ত হয়েছেন কেট উইন্সলেট, এডি ফালকাও, মিশেল ইও, ভিন ডিজেল, জিমেইন ক্লেমেন্ট, জিওভানি রিবিসি এবং ওনা চ্যাপলিন। ‘টাইটানিক’ তারকা কেট উইন্সলেট ২৫ বছর পর আবার জেমস ক্যামেরনের পরিচালনায় অভিনয় করলেন। মেটকাইনা বংশের মেয়ে রোনাল চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। এজন্য পানির ২০ ফুট গভীরে সাত মিনিট পর্যন্ত দম ধরে রেখে ডুবে থাকার কৌশল রপ্ত করেন তিনি।

সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা ‘অ্যাভাটার’-এর সিক্যুয়েল ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ মুক্তি পাবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর। এর মধ্য দিয়ে ১৩ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে।

‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’-এর চিত্রনাট্য যৌথভাবে সাজিয়েছেন জেমস ক্যামেরন এবং রিক জাফা ও আমান্ডা সিলভার দম্পতি। তাদের সঙ্গে মিলে গল্পটি যৌথভাবে লিখেছেন জশ ফ্রিডম্যান ও শেন স্যালেরনো। এটি সম্পাদনা করেছেন জেমস ক্যামেরন, স্টিফেন ই. রিভকিন, ডেভিড ব্রেনার, জন রিফুয়া। প্রযোজনায় জেমস ক্যামেরন ও জন ল্যান্ডাউ। ৩ ঘণ্টা ১২ মিনিট ব্যাপ্তির ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ হাজার ৬১৬ কোটি ৭৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার

‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমার দৃশ্য (ছবি: টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওস)

‘অ্যাভাটার’ সিনেমাতেই ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তির ভার্চুয়াল ক্যামেরা, সর্বাধুনিক সিনেম্যাটিক গ্রাফিক্স এবং স্টোরিওস্কোপিক সাউন্ড সিস্টেম প্রথম ব্যবহার হয়। ২০০৯ সালের ‌১৮ ডিসেম্বর মুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা হলে টানা ১০ মাস অভূতপূর্ব ব্যবসায়িক সাফল্য পায় এটি। ২০০৯ সালে মুক্তির পর হইচই ফেলে বিশ্বজুড়ে ২৮০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি আয় করে সিনেমাটি, অর্থাৎ ২৪ হাজার ৩০৫ কোটি ৩৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এটাই পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা। তিনটি শাখায় অস্কারে জিতেছে এই সিনেমা।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ