নাটক
মেহজাবীনের অন্যতম সেরা অভিনয়, ‘অনন্যা’র প্রশংসা মুখে মুখে
‘অনন্যা’ হয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। তার অভিনীত ‘অনন্যা’ সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। দারুণ একটি গল্প নিয়ে নির্মিত নাটকটির কথা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে একজন কর্মজীবী নারীর চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন তিনি। তার সাবলীল অভিনয় দেখে মুগ্ধ দর্শকেরা। শিশুর যত্ন নেওয়া, তাকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানোসহ প্রতিটি মুহূর্তকে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। কেউ কেউ মনে করছেন, নাটকটির জন্য আবার মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন এই তারকা!
‘অনন্যা’র মাধ্যমে অনেকদিন পর নতুন নাটকে অভিনয় করলেন মেহজাবীন। কর্মজীবী নারী ও শিশুসন্তানের মায়ের চরিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলায় তাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন অনেক নারী। তার অভিনয় মন ছুঁয়েছে সবার। অনেক নারীর অনুভব, নাটকটিতে সমাজের প্রত্যেক কর্মজীবী মায়ের বাস্তব সংগ্রামের চিত্র দেখানো হয়েছে এবং ‘অনন্যা’র গল্প তাদের জীবনের সঙ্গে মিলে গেছে। নাটকটি দেখতে দেখতে বারবার নিজেদের অতীতে ফিরে গেছেন তারা। অনেক নারী তখন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। কেউ কেউ নিজের অজান্তেই বারবার চোখের পানি ফেলেছেন।
বেশিরভাগ দর্শকের অভিমত, ‘অনন্যা’ শুধু একটি নাটক নয়, অনেক মেয়ের জীবনের বাস্তব গল্প। তাদের দৃষ্টিতে– নাটকটি শুধু অনন্যার নয়, বরং সমাজের হাজারো বাঙালি কর্মজীবী মায়ের জীবন সংগ্রামের গল্প। শিশুসন্তান বাসায় রেখে অফিস করা যে কতো কষ্টের, গল্পে অনবদ্যভাবে সেটি উঠে এসেছে। এতে দেখানো হয়েছে– সংসার, সন্তান, চাকরিসহ সব সামলানো মেয়েদের জীবন অনেক কঠিন। গল্পটি প্রশ্ন তুলে দেয়, মেয়েরা কি সত্যিই স্বাধীন? আদতে নারীদের স্বাধীনতা ও সমঅধিকারের কথা বক্তৃতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বাস্তবে নারীরা মূলত পরাধীন। বিশেষ করে কর্মজীবী নারীরা একটু বেশিই নিরুপায়।
গত ১৬ ডিসেম্বর ইউটিউবে সিনেমাওয়ালা চ্যানেলে অবমুক্ত হয়েছে ‘অনন্যা’। বাংলাদেশে এখন ট্রেন্ডিংয়ে দুই নম্বরে আছে চমৎকার নাটকটি। এর মন্তব্যের ঘরে দেখা যায় প্রশংসার বন্যা। একজন লিখেছেন, ‘পুরো নাটকটি প্রতিটি পরিবারের জন্য শিক্ষা অর্জন করার মতোই।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘সমাজের প্রত্যেক বাবার চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনা উচিত। নাটকটিতে শেখার অনেক কিছু আছে।’ একজন দর্শকের মন্তব্য, ‘নাটকটি সবার দেখা উচিত। অন্তত এতে সব পুরুষের শিক্ষা নেওয়ার মতো অনেক কিছু আছে।’ কেউ কেউ মনে করেন, সংগ্রাম করে টিকে থাকার ক্ষেত্রে মেয়েদের অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে ‘অনন্যা’।
‘অনন্যা’ পরিচালনা করেছেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। নারীদের নিয়ে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরায় তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। তিনি সাধারণত নিজের লেখা নাটক বানিয়ে থাকেন। কিন্তু এবার জাকারিয়া নেওয়াজ ও জাহান সুলতানার লেখা নাটক বেছে নিয়েছেন রাজ। চিত্রনাট্য লিখেছেন জাহান সুলতানা। এটি প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত বলা যেতেই পারে। কারণ কর্মজীবী নারীর সংগ্রাম একজন নারী চিত্রনাট্যকারই ভালোভাবে বোঝাতে পারতেন। পরিবার ও কর্মক্ষেত্রে কর্মজীবী নারীরা যেসব প্রতিকূলতার মুখে পড়েন, নাটকটিতে সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে সেগুলো। গল্পটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, ঘরে পুরুষদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা আশা করলেও নারীরা সেটি পান না বলেই ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।
নাটকের বেশ কয়েকটি সংলাপ দর্শকদের নাড়া দিয়েছে। অনন্যা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আগে অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কিছু কথা বলে, সেগুলো যেন প্রত্যেক নারীর মনের কথা। অনন্যা বলেছে, ‘মেয়েদের বলা হয়, তোমরা শিক্ষিত হও, ক্যারিয়ার গড়ো, উপার্জন করো; কিন্তু তোমাদের রাস্তায় অনেক বাধা থাকবে। কোনো ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে না। তাহলে কীভাবে সমান অধিকার হলো?’
এরপর অনন্যা বলে, ‘স্যার আমার ওপর অনেক চাপ। পারফেক্ট হওয়ার চাপ। পারফেক্ট মা হতে হবে, পারফেক্ট বউ হতে হবে, পারফেক্ট মেয়ে হতে হবে, পারফেক্টলি সংসার সামলাতে হবে, পারফেক্টলি অফিস করতে হবে। সবকিছুতে পারফেকশন চাই। বাচ্চার যদি জ্বর আসে, তাহলে আমার চাকরির দোষ। অফিসে ভালোভাবে কাজ করতে না পারলে বাচ্চার দোষ। আমি যদি ব্যথা পাই উফ করতে পারবো না। আমার যদি ক্লান্ত লাগে তবুও বলতে পারবো না আমি ক্লান্ত। এতো চাপ নিয়ে আমি যাবো কোথায়?’
কর্মস্থলে কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার কিংবা নির্দিষ্ট কক্ষের সুবিধা থাকা কতটা জরুরি, সেই বিষয়টি প্রকট হয়েছে নাটকের গল্পে। এছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়ে কর্মস্থলে পুরুষ সহকর্মীদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন থাকে, একটি দৃশ্যে দেখা গেছে সেটি। অনন্যা তখন বলে, ‘মা হওয়াটাও একটা চাকরি। আর সেটা ৮ ঘণ্টার না, ২৪ ঘণ্টার। যেখানে কোনো ছুটি নাই, বেতন নাই এবং বিশ্রামও নাই।’
‘অনন্যা’য় মেহজাবীনের প্রধান দুই সহশিল্পী শাশ্বত দত্ত ও ডলি জহুর। এর চিত্রগ্রহণ করেছে রাজু রাজ। নাটকে ব্যবহৃত গানটি প্রশংসিত হয়েছে। এটি গেয়েছেন পল্লবী রায়। এর কথা লিখেছেন মাহমুদ মানজুর, সুর ও সংগীত পরিচালনায় নাভেদ পারভেজ।
২০২৩ সালে ‘অনন্যা’ মেহজাবীন চৌধুরীর ষষ্ঠ ও শেষ কাজ। চলতি বছরের প্রথম দিন দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত ভিকি জাহেদের ‘কাজলের দিনরাত্রি’ টেলিফিল্মে মানসিক প্রতিবন্ধী কাজল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। মাঝে দুটি ওয়েব সিরিজ, একটি ওয়েব ফিল্ম ও একটি নাটকে দেখা গেছে তাকে। ‘অনন্যা’ দিয়ে বছরটা দারুণভাবেই শেষ করলেন তিনি।
-
ছবি ও কথা1 year ago
তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের কিছু ছবি
-
বলিউড2 years ago
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে ক্যাটরিনার মধুর প্রতিশোধ!
-
নাটক2 years ago
আমেরিকায় ফুরফুরে মেজাজে মেহজাবীন-তানজিন তিশা-ফারিণ
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
বুসানে ফারুকী-তিশার সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড়
-
ঢালিউড1 year ago
রাষ্ট্রপতি সিনেমাহলে সপরিবারে ‘প্রিয়তমা’ দেখলেন
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
‘জেলার’ হিট হওয়ায় ১০০ কোটি রুপি ও বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পেলেন রজনীকান্ত
-
ঢালিউড2 years ago
শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ কলকাতার এই নায়িকা
-
ঢালিউড2 years ago
‘বিউটি সার্কাস’: এমন চরিত্রে আর অভিনয় করবো না: ফেরদৌস