ঢালিউড
‘শনিবার বিকেল’কে আটকে রাখায় জয়ার প্রশ্ন
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাকে সেন্সর ছাড়পত্র দিতে এবার সরব হলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। বুধবার (১০ আগস্ট) ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে সিনেমাটি আটকে রাখায় কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
জয়া লিখেছেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যখন সেন্সর বোর্ড নামের বালাইটা উঠে যাচ্ছে, আমাদের দেশে সেটা তখন ফাঁসির রজ্জুর মতো চলচ্চিত্রের গলায় চেপে বসছে। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ এর সবশেষ শিকার।’
দুই বাংলার জনপ্রিয় এই তারকার প্রশ্ন, ‘কোনো চলচ্চিত্রের কাহিনী কী হবে, তারও কি এখন প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসতে হবে?’
জয়া মনে করেন, ‘চলচ্চিত্রের বিষয় আকাশের তলায় মাটির পৃথিবীর যেকোনো কিছু। চূড়ান্ত কল্পনা, নিরেট বাস্তব, বাস্তব থেকে অনুপ্রাণিত কল্পনা।’
‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি সেন্সর বোর্ডে সাড়ে তিন বছর আটকে আছে কেনো? জয়ার প্রশ্ন, ‘হলি আর্টিজানের শোচনীয় ঘটনাটির ছায়া আছে বলে? আসলেই আছে কিনা আমার জানা নেই। যদি থাকেও, তাহলেই বা ছবিটা আটকে দেওয়ার যুক্তি কী?’
জয়া আরও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘হলি আর্টিজান ঘটেনি? আমাদের মন থেকে ধুয়ে-মুছে গেছে? সত্যি বলতে, এই ঘটনা কখনোই আমাদের মন থেকে মুছে যেতে পারে না। মুছে যেতে দেওয়া যায়ও না।’
জয়ার মন্তব্য, ‘যে ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা মোটেও চাই না, আমাদের ছেলেমেয়েদের সামনে থেকে যে পথ চিরকালের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখতে চাই, হলি আর্টিজানের ঘটনা তার জোরালো সতর্কঘণ্টা হিসেবে মন থেকে মনে বাজিয়ে যেতে হবে। ঘণ্টা বাজিয়ে ঘুম থেকে আমাদের মনটাকে জাগিয়ে তোলা তো চলচ্চিত্রেরই একটা কাজ।’
জয়ার দাবি, ‘আমরা চলচ্চিত্রের মুক্তি চাই, সব শিল্পের মুক্তি চাই। কারণ আমরা মানুষের মুক্তি চাই।’
২০১৯ সালে সেন্সর বোর্ডের সনদ পাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও এখনো আটকে আছে ‘শনিবার বিকেল’। অথচ সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা এর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ফেস্টিভ্যালে সমালোচক পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে এই সিনেমা। এছাড়া মিউনিখ, সিডনিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছে এটি। দেশের ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’ হতে পারে এমন আশঙ্কায় সিনেমাটির মুক্তি আটকে দেয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। বিষয়টি এখন আপিল বিভাগে রয়েছে।
‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাকে সেন্সর ছাড়পত্র দিতে গত ৯ আগস্ট দুপুর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন নির্মাতা, শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীরা। এর অংশ হিসেবে ‘ফ্রি স্যাটারডে আফটারনুন’ এবং ‘রিলিজ স্যাটারডে আফটারনুন’ হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়েছে। সবার আহ্বান, ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাক। সিনেমাটি আটকে রাখায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, অভিনেতা শতাব্দী ওয়াদুদ, ইমতিয়াজ বর্ষণ, ইমন, পরিচালক মালেক আফসারী, অনিমেষ আইচ, মেজবাউর রহমান সুমন, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, রেদওয়ান রনি, চয়নিকা চৌধুরী, রায়হান রাফি, কাজল আরেফিন অমি, আবু শাহেদ ইমন, ইমেল হক, আফজাল হোসেন মুন্না, ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল, নিয়ামুল মুক্তা, মাহমুদুর রহমান হিমি।
সবার সমর্থন পেয়ে আবেগাপ্লুত ফারুকী। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ফেসবুকে নিজের অনুভূতিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি একা খেতে পারি না। একা চলতে পারি না। একাকীত্বকে আমার ভীষণ ভয়। এই দুই দিনে আমার সতীর্থ ফিল্মমেকাররা ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তির দাবিতে যেরকম স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সোচ্চার হয়েছে তাতে বহুবারই আমার চোখ ভিজেছে। সাধারণত এসব প্রতিবাদ সংগঠিত করতে হয় ফোন করে, সভা করে। কিন্তু আমি তো কাউকে ফোন করি নাই, কথাও বলি নাই। তারপরও আপনারা যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে বহুবার চোখ ভিজেছে। আপনারা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন– আমি একা নই, আমি আপনাদেরই একজন। এটা আমাদের জীবনের অন্যতম সেরা একটি দিন। সবাইকে ভালোবাসি। আসুন, একসঙ্গে থাকি এবং কোনো ফিল্মমেকারের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে পাশে দাঁড়াই।’
এর আগে মঙ্গলবার সকালে ‘শনিবার বিকেল’ আটকে রাখায় ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফারুকী। তার কথায়, ‘আমার কতো রাত গেছে অনিদ্রায়। কতো দিন গেছে ক্ষমতাবানদের দুয়ারে হাত মুছতে মুছতে। কতো দুপুর গেছে রাগে অন্ধ হয়ে। কতো বছর গেছে নিজের চিৎকার নিজেই গিলে ফেলে। ধন্যবাদ, হে রাষ্ট্র! ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই। সুতরাং, ঠিকই আছে। তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে ঠিকঠাক সাইজ করার জন্য।’
ফারুকী তার আগের সিনেমাগুলোর বেলায় ঘটে যাওয়া অযাচিত কিছু ঘটনা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ব্যাচেলর’-এর সময় তুমি ভাবছো আমার ছবি সমাজ নষ্ট করে ফেলবে! ‘মেড ইন বাংলাদেশ’-এ ভাবছো এই ছবি দেশ ধ্বংস করবে! সুতরাং দেড় বছর সেন্সর জেলে রাখছো! ঠিকই আছে। ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার’-এর জন্য সেন্সরের জেলটা একটা বোধ হয় কম হয়ে গিয়েছিলো। অপরাধ বিবেচনায় ওই সিনেমা আটকে রাখা উচিত ছিলো তিন বছর। যাই হোক ‘শনিবার বিকেল’-এ সেটা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।’
এরপর তীর্যকভাবে ফারুকী লিখেছেন, ‘উঠতে বসতে এভাবে পিটিয়ে ছাল তোলার জন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু এভাবে বোধ হয় পুরোপুরি হবে না। কারণ একটা ছবি ভাবা হয়ে গেলে তো সেটা দুনিয়াতে এগজিস্ট করে গেলো। বানানো হলে তো আরো শক্তভাবে এগজিস্ট করলো। আজ হোক কাল হোক সেটা তো দেখে ফেলবে মানুষ। তাই বলি কী, এমন কিছু একটা করো যাতে ভাবনাটাও বন্ধ করে দেওয়া যায়। এমন ওষুধ আবিষ্কার করো হে রাষ্ট্র, যাতে কারো মনে ক্ষোভ জন্ম না নেয়! কারণ সম্মিলিত ক্ষোভের চেয়ে বিধ্বংসী কোনো অস্ত্র নাই! আরো খেয়াল রাখতে হবে ক্রমাগত চাপে এই ক্ষোভ যেন ঘৃণায় রূপ না নেয়। কারণ কে না জানে ঘৃণার চেয়ে বড় কোনো মারণাস্ত্র নাই।’
-
ছবি ও কথা1 year ago
তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের কিছু ছবি
-
বলিউড2 years ago
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে ক্যাটরিনার মধুর প্রতিশোধ!
-
নাটক2 years ago
আমেরিকায় ফুরফুরে মেজাজে মেহজাবীন-তানজিন তিশা-ফারিণ
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
বুসানে ফারুকী-তিশার সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড়
-
ঢালিউড1 year ago
রাষ্ট্রপতি সিনেমাহলে সপরিবারে ‘প্রিয়তমা’ দেখলেন
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
‘জেলার’ হিট হওয়ায় ১০০ কোটি রুপি ও বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পেলেন রজনীকান্ত
-
ঢালিউড2 years ago
শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ কলকাতার এই নায়িকা
-
ঢালিউড2 years ago
‘বিউটি সার্কাস’: এমন চরিত্রে আর অভিনয় করবো না: ফেরদৌস