Connect with us

ঢালিউড

স্মরণে-শ্রদ্ধায় নায়করাজ রাজ্জাক

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

রাজ্জাক (ছবি: ফেসবুক)

দেশীয় সিনেমার নায়করাজ রাজ্জাকের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট ৭৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি। রুপালি পর্দার কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভক্ত, দর্শক ও তারকারা।

ঢাকার বনানীতে রাজ্জাকের কবর জিয়ারত করেছে পরিবার। বাসায় তাঁর স্মরণে কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল হবে। দুই ছেলে রেজাউল করিম বাপ্পারাজ ও খালিদ হোসেইন সম্রাট এবং তিন মেয়ে নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি ও আফরিন আলম ময়নাকে রেখে গেছেন তিনি।

রাজ্জাক (ছবি: ফেসবুক)

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি দক্ষিণ কলকাতার কালীগঞ্জের নাকতলায় জন্মগ্রহণ করেন আবদুর রাজ্জাক। আকবর হোসেন ও নিসারুননেছার এই ছেলের অভিনয়ের শুরু কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন স্বরসতী পূজায় মঞ্চনাটকে। গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁকে বেছে নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। প্রথম অভিনীত নাটক ‘বিদ্রোহী’। কলেজজীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক। এছাড়া কলকাতায় ‘পঙ্কতিলক’ ও ‘শিলালিপি’ নামে আরো দুটি সিনেমায় অভিনয় করেন।

‘অনুরোধ’ সিনেমার পোস্টার (ছবি: দেশ চিত্রকথা)

কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার কারণে ১৯৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন রাজ্জাক। ঢালিউডে নায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম সিনেমা জহির রায়হানের ‘বেহুলা’। বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে তিন শতাধিক সিনেমায় দেখা গেছে তাঁকে। এরমধ্যে উল্লে­খযোগ্য ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘আবির্ভাব’, ‘এতটুকু আশা’, ‘ময়নামতি’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘পীচ ঢালা পথ’, ‘অনুরোধ’, ‘নাচের পুতুল’, ‘দ্বীপ নেভে নাই’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বেঈমান’, ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘শুভদা’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘ঢেউ এর পরে ঢেউ’, ‘মধু মিলন’, ‘সাধু শয়তান’, ‘মাটির ঘর’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘চাঁপা ডাঙ্গার বউ’, ‘সখী তুমি কার’, ‘অমর প্রেম’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘সংসার’, ‘স্বরলিপি’, ‘সোহাগ’, ‘বিরহ ব্যথা’, ‘আনারকলি’, ‘চোর’, ‘সমাধি’, ‘স্বাধীন’, ‘সন্ধি’, ‘জিঞ্জির’, ‘সমর’, ‘শর্ত’, ‘স্বাক্ষর’, ‘বন্ধু’, ‘শাস্তি’, ‘শ্রদ্ধা’ প্রভৃতি। নায়ক হিসেবে শেষ সিনেমা ‘মালামতি’। সবশেষ অভিনীত সিনেমা ‘কার্তুজ’ (২০১৪)।

‘অনন্ত প্রেম’ সিনেমায় ববিতা ও রাজ্জাক (ছবি: ফেসবুক)

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৬টি সিনেমা পরিচালনা করেছেন রাজ্জাক। তাঁর প্রথম পরিচালিত সিনেমা ‘অনন্ত প্রেম’ (১৯৭৭)। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তিনি পরিচালনা করেন ‘চাঁপা ডাঙ্গার বউ’। এছাড়া নিজের প্রতিষ্ঠান রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন থেকে সিনেমা প্রযোজনা করেছেন।

রাজ্জাক (ছবি: ফেসবুক)

রাজ্জাক পাঁচবার সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এগুলো হলো ‘কী যে করি’ (১৯৭৭), ‘অশিক্ষিত’ (১৯৭৯), ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ (১৯৮৩), ‘চন্দ্রনাথ’ (১৯৮৫) এবং ‘যোগাযোগ’ (১৯৮৯)। তাঁকে নায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন বাংলা সিনেমা বিষয়ক পত্রিকা চিত্রালী’র সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী।

রাজ্জাক (ছবি: চ্যানেল আই)

১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন রাজ্জাক। ২০১৫ সালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তাঁকে। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ