হলিউড
হলিউডে পাঁচ মাসের একটি ধর্মঘটের ইতি ঘটছে, অভিনয়শিল্পীদের দাবির কী হবে?
একনজরে
- স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে পারিশ্রমিক বৃদ্ধি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের প্রভাবকে ঘিরে ধর্মঘটের সূত্রপাত।
- তিন বছরের নতুন শ্রমচুক্তির ব্যাপারে অবশ্যই ডব্লিউজিএ নেতা ও সাধারণ সদস্যদের অনুমোদন থাকতে হবে।
- ডব্লিউজিএ বলছে, তাদের নিজেদের আর্থিক লাভ ও সুরক্ষার জন্য অসাধারণ শ্রমচুক্তি হচ্ছে।
- হলিউড এখনো অভিনয়শিল্পীদের ধর্মঘট অবসানের চুক্তির অপেক্ষায় আছে।
হলিউডে ধর্মঘটে থাকা গল্পকার-চিত্রনাট্যকারেরা অবশেষে বাঘা প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থাগুলোর সঙ্গে তিন বছর মেয়াদি একটি প্রাথমিক শ্রমচুক্তিতে পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে চলমান দুটি ধর্মঘটের মধ্যে একটির ইতি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। লেখকদের পাশাপাশি অভিনয়শিল্পীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সিনেমা ও টিভি অনুষ্ঠানের কাজ বন্ধ রয়েছে।
গল্পকার-চিত্রনাট্যকারদের ইউনিয়নকে সাধুবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি সবাইকে সবার ন্যায্য প্রদানের অনুরোধ করেছেন।
হলিউডে সিনেমা ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য কাজ করা ১১ হাজার ৫০০ জন গল্পকার-চিত্রনাট্যকারদের প্রতিনিধিত্ব করে রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা (ডব্লিউজিএ)। তিন বছরের চুক্তিটি কার্যকর করতে সমিতির নেতাদের পাশাপাশি সব সদস্যের অনুমোদন পেতে হবে।
নতুন চুক্তিকে নিজেদের আর্থিক লাভ ও সুরক্ষার জন্য অসাধারণ হিসেবে বর্ণনা করেছে ডব্লিউজিএ। এক বিবৃতিতে মধ্যস্থতায় অংশ নেওয়া কমিটির সদস্যরা বলেন, ‘ডব্লিউজিএ সদস্যদের দৃঢ় সংহতি এবং টানা ১৪৬ দিন (প্রায় পাঁচ মাস) ধরে ধর্মঘটে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়া ইউনিয়নের সতীর্থদের অভূতপূর্ব সমর্থনের সুবাদে নতুন চুক্তি সম্ভব হচ্ছে। গল্পকার-চিত্রনাট্যকারেরাই যেকোনও কন্টেন্টের মূল অংশ তৈরি করে, যেগুলোর মাধ্যমে প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঘরে তোলে।’
গত ২ মে থেকে ধর্মঘট করে আসছে ডব্লিউজিএ। পারিশ্রমিক বৃদ্ধি, আরো ভালো কর্মপরিবেশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কন্টেন্টের জনপ্রিয়তা অনুযায়ী ন্যায্য সম্মানীসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় রাজপথে নামেন সমিতির সদস্যরা।
হলিউডের সিনেমা ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজকদের জোট অ্যালায়েন্স অব মোশন পিকচার অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউচার্স (এএমপিটিপি)। ওয়াল্ট ডিজনি, নেটফ্লিক্স, ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি এবং অন্যান্য প্রধান প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য গোষ্ঠী এটি। একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেন, ‘ডব্লিউজিএ এবং এএমপিটিপি একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছেছে।’
কয়েক মাসের অচলাবস্থা কাটাতে হলিউডের চার হেভিওয়েট প্রযোজক ডিজনি’র প্রধান নির্বাহী বব ইগার, ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির সিইও ডেভিড জাসলাভ, নেটফ্লিক্সের সহ-সিইও টেড সারানডোস এবং এনবিসিইউনিভার্সেল স্টুডিও গ্রুপের চেয়ার ডোনা ল্যাংলি চলতি সপ্তাহে আলোচনায় যোগ দেন।
ধর্মঘট করা লেখক-অভিনয়শিল্পীদের দাবি অবাস্তব বলে সমালোচনা করেছিলেন ডিজনি’র প্রধান নির্বাহী বব আইজিয়ার। তবে পরবর্তী সময়ে সৃজনশীল লেখকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সমঝোতামূলক একটি বার্তা লিখে পাঠান তিনি।
জানা যায়, প্রস্তাবিত চুক্তিটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ডব্লিউজিএ’র আলোচক কমিটির তথ্যানুযায়ী, এটি চূড়ান্ত চুক্তিতে রূপ নেওয়ার পরেই বিস্তারিত শেয়ার করা হবে। এরপর আলোচকরা চুক্তিটি সমিতির নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ করা হবে কিনা সেই বিষয়ে ভোট দেবেন। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তারা এটি ভোটের জন্য সাধারণ সদস্যদের কাছে উপস্থাপন করবেন কিনা।
ডব্লিউজিএ এবং প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থাগুলোর মধ্যকার মীমাংসাকে মাইলফলক হিসেবে দেখা হলেও হলিউডে সহসাই স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরছে না। কারণ অভিনয়শিল্পীদের সমিতি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড–আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্টস (এসএজি-এএফটিআরএ) এখনো ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে। এ’র সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজার। তাদের মধ্যে আছেন সিনেমা ও টেলিভিশন অভিনয়শিল্পী, স্টান্ট পারফরমার, ভয়েস ওভার শিল্পী ও অন্যান্য মিডিয়া পেশাদারকর্মীরা।
মিল্কেন ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ কেভিন ক্লোডেনের ধারণা, এমন অচলাবস্থায় ক্যালিফোর্নিয়া এবং নিউ মেক্সিকো, জর্জিয়া ও নিউইয়র্কের শোবিজ অঙ্গনে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৫০০ কোটি ডলার হতে পারে।
হলিউডে ৬৩ বছর পর অভিনেতা-অভিনেত্রী ও চিত্রনাট্যকারেরা আবার একযোগে ধর্মঘট পালন করেছেন। ১৯৬০ সালে চিত্রনাট্যকারেরা ২১ সপ্তাহ এবং অভিনয়শিল্পীরা ছয় সপ্তাহ কাজ বন্ধ রেখেছিলেন।
হলিউডে আবার একসঙ্গে দুটি ধর্মঘটের কারণে সিনেমা ও টিভি সিরিজের নির্মাণ বন্ধ আছে। এ কারণে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের রাতের জনপ্রিয় টক শোগুলো পুনঃপ্রচার হয়েছে। চলতি মাসে লেখকদের ছাড়াই ‘দ্য ড্রিউ ব্যারিমোর শো’সহ দিনের টক শো আবার চালুর প্রচেষ্টা আন্দোলনকারীদের সমালোচনার মুখে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
ধর্মঘটে ক্যামেরা অপারেটর, কাঠমিস্ত্রি, প্রোডাকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অন্যান্য ক্রু সদস্যদের পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্য সরবরাহকারী, ফুল বিক্রেতা, পোশাক সরবরাহকারী এবং সিনেমা ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে নির্মাণে সহায়ক অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর প্রভাব ফেলেছে ধর্মঘট।
২০০৭-০৮ সালে ১০০ দিনের ধর্মঘটে নতুন মিডিয়ার প্রেক্ষাপটে সিনেমা ও টিভি অনুষ্ঠান ডাউনলোডের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন-সমর্থিত ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে সরবরাহ করা কন্টেন্টকে সামনে রেখে ডব্লিউজিএ’র সুরক্ষা প্রসারিত করার ওপর আলোকপাত করা হয়েছিলো। আর এবারের ধর্মঘটে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কন্টেন্ট থেকে লভ্যাংশ দাবি করেছেন লেখকেরা। একইসঙ্গে সৃজনশীল কর্মপ্রক্রিয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দাবি তাদের। আশঙ্কা করা হয়েছে, প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থাগুলো এআইকে স্ক্রিপ্ট সংশোধনের জন্য তুলে দেবেন এবং লেখককে এটি পুনর্লিখন কিংবা ঘষামাজার জন্য কম হারে অর্থ প্রদান করা হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষণের জন্য স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করলে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বত্ব চুরির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেকে।
১৯৮৮ সালের পর চিত্রনাট্যকারদের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী ধর্মঘট দেখা গেছে এবার। এর সমাপ্তি উদযাপন করেছেন হলিউড প্রযোজকেরা। তবে এখনো অর্ধেক কাজ বাকি। অভিনয়শিল্পীদের কাজে ফিরিয়ে আনার পথ খুঁজে বের করতে হবে তাদের।
এক বিবৃতিতে এসএজি-এএফটিআরএ’র নেতাকর্মীরা প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিদের আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার এবং তাদের দাবি মেনে ন্যায্য চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন। অভিনয়শিল্পীদের দাবির মধ্যে রয়েছে– ন্যূনতম মজুরি, তাদের পারফরম্যান্স প্রতিস্থাপনকারী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কন্টেন্ট থেকে লভ্যাংশ।
স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড (এসএজি) ডিজিটাল প্রতিরূপের মাধ্যমে বেদখল হওয়া থেকে অভিনয়শিল্পীদের নিরাপদ রাখার দাবি তুলেছে। অভিনয়শিল্পীদের বদলি হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় এবং কম্পিউটারে তৈরি মুখ ও কণ্ঠ ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা চায় এসএজি। এছাড়া শীর্ষস্থানীয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর কাছে লভ্যাংশের ন্যায্য বিভাজন এবং আরো ভালো কর্মপরিবেশ চায় এসএজি।
সর্বশেষ ১৯৮০ সালের জুলাইয়ে এসএজি-এএফটিআরএ সদস্যরা ধর্মঘট করেন। তখন ক্যাবল টেলিভিশন এবং ভিডিওটেপের জন্য নির্মিত টিভি অনুষ্ঠান ও সিনেমা বিক্রির লভ্যাংশকে কেন্দ্র করে প্রযোজক-পরিবেশকদের সঙ্গে ইউনিয়নটির সদস্যদের দ্বন্দ্ব বেঁধেছিলো। উভয় পক্ষ নতুন সমঝোতার শর্তাবলী নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেইসব শর্তে দুটি পক্ষের দাবি ও বিভিন্ন বিষয়ে উদ্বেগের প্রতিফলন দেখা যায়।অভিনয়শিল্পীদের সেই ধর্মঘট ১০ সপ্তাহ স্থায়ী হয়েছিলো। এ কারণে প্রায় ১০ কোটি ডলারের লোকসান হয়েছিলো। বর্তমান সময়ে যা প্রায় ৩৭ কোটি মার্কিন ডলারের সমান।
গত জুন মাসে ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা একটি চুক্তি নিয়ে সফল আলোচনা করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন না পরিচালকেরা।
-
ছবি ও কথা1 year ago
তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের কিছু ছবি
-
বলিউড2 years ago
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে ক্যাটরিনার মধুর প্রতিশোধ!
-
নাটক2 years ago
আমেরিকায় ফুরফুরে মেজাজে মেহজাবীন-তানজিন তিশা-ফারিণ
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
বুসানে ফারুকী-তিশার সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড়
-
ঢালিউড1 year ago
রাষ্ট্রপতি সিনেমাহলে সপরিবারে ‘প্রিয়তমা’ দেখলেন
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
‘জেলার’ হিট হওয়ায় ১০০ কোটি রুপি ও বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পেলেন রজনীকান্ত
-
ঢালিউড2 years ago
শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ কলকাতার এই নায়িকা
-
ঢালিউড2 years ago
‘বিউটি সার্কাস’: এমন চরিত্রে আর অভিনয় করবো না: ফেরদৌস