ঢালিউড
‘হাওয়া’য় ভাসছেন দর্শকরা
‘হাওয়া’ লেগেছে দর্শকদের মনে। ‘হাওয়া’ নিয়ে চলছে মাতামাতি ও উচ্ছ্বাস। ফলে বাংলা সিনেমার পালে বইছে সুদিনের ‘হাওয়া’। মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’র নৌকায় ভেসে মুগ্ধ দর্শকরা। মুক্তির আগেই ‘হাওয়া’র টিকিট যেন নিমিষেই হাওয়া হয়ে যায়! তাই প্রথম তিন দিন প্রতিটি শো হাউজফুল। দর্শকদের ভিড় ছিল অভূতপূর্ব। চারপাশে এখন ‘হাওয়া’র জয়জয়কার।
সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড প্রযোজিত সিনেমাটি রাজধানীসহ সারাদেশে মুক্তি পেয়েছে গত ২৯ জুলাই। ‘হাওয়া’ দেখে অভিভূত অনেক দর্শকের মন্তব্য, এমন ভিজ্যুয়াল আর্ট বাংলাদেশি সিনেমায় কখনো দেখেননি তারা। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এর একটি দৃশ্যও ভিএফএক্স নয়!
সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশিরভাগ দর্শক ‘হাওয়া’র প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এক শব্দে বলা যায় মাস্টারপিস! তাদের মতে, এর নির্মাণ, চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, সাউন্ড ডিজাইন, সংগীত, সংলাপ এবং সবার অভিনয় অনবদ্য। গল্পবলায় নতুনত্ব পেয়েছেন তারা। কেউ বলেছেন, “বাংলা সিনেমার নতুন ভাষা প্রকাশে সংশ্লিষ্টদের একাগ্রতা, পরিশ্রম ও নিখুঁত কাজের জন্য আন্তরিক চেষ্টার প্রতিফলন ঘটেছে পর্দায়। সিনেমা হলে গিয়ে ‘হাওয়া’র অভিজ্ঞতা অন্য স্তরের।”
সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের বয়ান
‘হাওয়া’ মুক্তির প্রথম সপ্তাহের টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। ‘হাওয়া’য় ভাসতে সিনেপ্লেক্সে কাউন্টারের সামনে দেখা গেছে বিশাল লাইন। টিকিট না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে। অনেকে টিকিট পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। এসব চিত্র বলে দেয়, ছন্দে ফিরছে বাংলা সিনেমা। সব মিলিয়ে এ যেন বাংলা সিনেমার জয়জয়কার!
‘হাওয়া’র জন্য মাতামাতি বেশি হওয়ায় কেরানীগঞ্জে লায়ন সিনেমাসে তিনটি বিশেষ শো বৃদ্ধি করা হয়েছে। এজন্য ৩১ জুলাই ‘দিন: দ্য ডে’ নামিয়ে দিয়েছে সিনেমা হলটির কর্তৃপক্ষ।
স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদের মন্তব্য, ‘যারা বাংলা সিনেমাকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন, তারাই এখন বাংলা সিনেমার টিকিটের জন্য ফোন দেন। বাংলা সিনেমার সুদিন ফিরছে। এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দের ব্যাপার। বাংলা সিনেমায় দর্শকদের ভিড় দেখে সত্যিই খুব গর্ব হয়। মনে হচ্ছে, ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।’
যেভাবে ‘হাওয়া’ উন্মাদনার সৃষ্টি
‘ঝড়ো হাওয়া’র পূর্বাভাস মিলেছিলো মুক্তির আগেই। এর শুরুটা হয় নজরকাড়া পোস্টারের মাধ্যমে। তারপর ট্রেলার প্রশংসিত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। সিনেমাটির পালে তুমুল ‘হাওয়া’ নিয়ে আসে ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি। ফলে সেই আশা গতি পায়। প্রায় সবাই তন্ময় হয়ে শুনেছেন ‘তুমি বন্ধু কালা পাখি, আমি যেন কী/বসন্তকালে তোমায়, বলতে পারিনি।’ এর কথা ও সুর হাশিম মাহমুদের। সংগীতায়োজনে ইমন চৌধুরী। এটি গেয়েছেন আরফান মৃধা শিবলু। গানটি প্রকাশের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় এর বন্দনা।
প্রায় মাসখানেক ধরে ‘হাওয়া’র প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন কলাকুশলীরা। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সাক্ষাৎকার, টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং কনসার্টের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছুটে গেছেন তারা। বিভিন্ন সিনেমা হল পরিদর্শন তো আছেই। সব মিলিয়ে উৎসবের মতো ব্যস্ততা। দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানকে সঞ্চালক হিসেবে রেখে আড্ডা আয়োজন আরেক আলোচিত বিষয়। এছাড়া এই সিনেমাকে কেন্দ্র করে মেঘদল ব্যান্ড দীর্ঘ বিরতির পর নতুন গান ‘এ হাওয়া’ নিয়ে হাজির হয়। কারণ নির্মাতা সুমন মেঘদল ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। মেঘদলের পক্ষ থেকে এটি তার প্রথম সিনেমার প্রতি একটি নিবেদন।
কী আছে ‘হাওয়া’য়
গভীর সমুদ্রে টানা দেড় মাসের মতো ‘হাওয়া’র শুটিং হয়েছে। এটি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া আট জেলে এবং রহস্যময় বেদেনী গুলতির গল্প। মাঝিদের গালাগাল আর হল্লার মাঝে গল্পের সুর বাজে। গুলতির আগমনে জেলেদের মধ্যে সন্দেহ, দ্বন্দ্ব ও ভয় বাড়ে। চান মাঝির গল্প চাঁদ সওদাগরের হাত ধরে চলে। আর অনেক মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে গুলতির কিসসা ভাসতে থাকে দরিয়ায়।
সিনেমাটিকে জেলেজীবনের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের জলেরও গল্প বলা যায়। সেই বৈরী মাঝদরিয়ায় ভাসমান নৌযানে সাজানো ‘হাওয়া’ যেন বাংলা সিনেমাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেলো। এর রঙ ও ফ্রেম অদ্ভুত সুন্দর, যেন মনে হয় তুলির আঁচড়ে আঁকা কবিতা! বিশেষ করে চিত্রগ্রহণ সিনেমার জন্য নতুন এক মানদণ্ড তৈরি করলো। খুলনার আঞ্চলিক ভাষায় সংলাপ বেশ প্রাণবন্ত ও জমজমাট। দর্শকরা মগ্ন হয়ে এসব উপভোগ করেছেন।
অভিনয়শিল্পীরা অনবদ্য
‘হাওয়া’র কলাকুশলীরা দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। প্রতিটি চরিত্র অনবদ্য। মাছ ধরা বোট ‘নয়নতারা’র সরদার চান মাঝি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। তার অনেক সাধনার একটি কাজ ‘হাওয়া’। অভিনয়ের মুন্সিয়ানায় নিজেকে ছাপিয়ে গেছেন তিনি। সমুদ্রে মাঝ ধরা জেলে ইব্রাহীম চরিত্রে ‘পরাণ’ তারকা শরিফুল রাজ আবার মন কেড়েছেন। গুলতি রূপে নাজিফা তুষি সংলাপ ছাড়া শুধু চোখের অভিব্যক্তিতে দর্শককে জাদুমন্ত্রের মতো আটকে রেখেছেন। কী চমৎকার অভিনয়! নাগু চরিত্রে নাসিরউদ্দিন খান, ইজা চরিত্রে সুমন আনোয়ার এবং উরকেস চরিত্রে সোহেল মন্ডল অসাধারণ অভিনয় করেছেন। তবে সব ছাপিয়ে দর্শকরা সমস্বরে গেয়ে উঠছেন ‘সাদা সাদা কালা কালা’!
-
ছবি ও কথা1 year ago
তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের কিছু ছবি
-
বলিউড2 years ago
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে ক্যাটরিনার মধুর প্রতিশোধ!
-
নাটক2 years ago
আমেরিকায় ফুরফুরে মেজাজে মেহজাবীন-তানজিন তিশা-ফারিণ
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
বুসানে ফারুকী-তিশার সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড়
-
ঢালিউড1 year ago
রাষ্ট্রপতি সিনেমাহলে সপরিবারে ‘প্রিয়তমা’ দেখলেন
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
‘জেলার’ হিট হওয়ায় ১০০ কোটি রুপি ও বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পেলেন রজনীকান্ত
-
ঢালিউড2 years ago
শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ কলকাতার এই নায়িকা
-
ঢালিউড2 years ago
‘বিউটি সার্কাস’: এমন চরিত্রে আর অভিনয় করবো না: ফেরদৌস