Connect with us

ওটিটি

শরণার্থীদের সেই রোমহর্ষক ইতিহাস নিয়ে ওয়েব সিরিজ

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

‘ফেউ’ ওয়েব সিরিজের দৃশ্য (ছবি: চরকি)

রোমহর্ষক ও ধুলোজমা ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে তৈরি হলো নতুন ওয়েব সিরিজ ‘ফেউ’। এতে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মানবতাকে নৃশংসভাবে খুন করার মধ্য দিয়ে সুন্দরবনে রচিত মরিচঝাঁপি গণহত্যার ইতিহাসের কথা। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির জন্য এটি পরিচালনা করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান। 

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগণা জেলার একটি দ্বীপের নাম মরিচঝাঁপি। দেশভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে পাড়ি দিয়েছিল। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে নিম্নবর্ণের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ আশ্রয় নেয় মরিচঝাঁপিতে। সরকারি আশ্বাসেই সেখানে আবাস গড়ে তারা। কিন্তু ভোটের আগের রাজনীতি রূপ পাল্টে ফেলে ভোটের পর। শুরু হয় শরণার্থী উচ্ছেদ। মরিচঝাঁপিতে খাবার ও পানি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়াও ঘরে আগুন দেওয়া, নৌকা ডুবানোসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যা চলতে থাকে। এতে করে তৎকালীন ভারতের রাজ্য সরকার নিন্দিত হলেও কিছু আসে যায়নি তাদের। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১৬ মে তারা মরিচঝাঁপিকে উদ্বাস্তু শূন্য করতে সক্ষম হয়। সরকারি হিসাবে সেখানে মোট নিহতের সংখ্যা মাত্র দুই জন হলেও বিভিন্ন হিসাবে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।

‘ফেউ’ ওয়েব সিরিজের দৃশ্য (ছবি: চরকি)

গত ১১ জানুয়ারি ‘ফেউ’র প্রথম টিজার প্রকাশ্যে এসেছে। এতে ছোট ছোট দৃশ্যে বোঝানো হয়েছে গল্পটির অঞ্চলগত বৈশিষ্ট্য। ছোট-বড় নৌকা, ঘন জঙ্গল, কিছু মানুষের ধস্তাধস্তি ও উদযাপনের মতো দৃশ্য আছে টিজারে। এছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে একটি সংলাপ। সেটি হলো, ‘রিফিউজিগো দ্যাশ-জাত বইলে কিছু আছে নাকি! আমরা তো মন্দিরের ঘণ্টার মতো। যে বাজায় খালি বাইজে যাই।’

সুকর্ন সাহেদ ধীমান বলেন, ‘সুন্দরবনে বনবিবি, ডাকাতসহ স্থানীয় অনেক মিথের কথা শোনা যায়। কিন্তু আমি খুঁজেছি ওই অঞ্চলের রাজনীতি। সেখান থেকেই গল্পটি নিয়ে কাজ করা। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এসব তথ্য সংগ্রহ করে এগিয়েছি গল্পবুননের কাজ। ২০২১ সালে মনে হলো, এটি দিয়ে কিছু নির্মাণ করতে চাই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গল্পটা চূড়ান্ত করি। চিত্রনাট্যের ১৭টি ড্রাফট করার পর আমরা কাজ শুরু করতে পেরেছি।’

‘ফেউ’ ওয়েব সিরিজের দৃশ্য (ছবি: চরকি)

‘ফেউ’র প্রেক্ষাপট ইতিহাস নির্ভর হলেও ওয়েব সিরিজটি ফিকশনাল। ইতিহাসের সঙ্গে বিভিন্ন চরিত্র, জানা ঘটনা ও এই অঞ্চলের গল্প তুলে ধরা হয়েছে এতে। ধীমান বলেন, ‘আমরা একটি সত্যি ঘটনার ছায়া অবলম্বন করেছি, অনুপ্রেরণা নিয়েছি। সেটি এই সিরিজের মূল কেন্দ্র। তবে সেই কেন্দ্রকে আবর্তিত করে যত কিছু, সবই আমার দেখা ও জানা মোংলার মানুষ, তাদের জীবন ও রাজনীতি থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতা।’

চরকি জানিয়েছে, শিগগিরই ‘ফেউ’ সিরিজের মুক্তির তারিখ জানানো হবে। এর গল্প লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও রোমেল রহমান। চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও সিদ্দিক আহমেদ।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ