Connect with us

ঢালিউড

‘ছুটির ঘণ্টা’র পরিচালকের প্রয়াণে শোক

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

কালজয়ী সিনেমা ‘ছুটির ঘণ্টা’র পরিচালক আজিজুর রহমানের প্রয়াণে শোকাহত ঢালিউড। তার বিভিন্ন ছবির অভিনয়শিল্পীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতিচারণ করেছেন।

আজিজুর রহমানের পরিচালনায় কয়েকটি নন্দিত সিনেমায় অভিনয় করেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “আরেকটি নক্ষত্রের পতন। বাংলা সিনেমায় আমার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। আমার পঞ্চম সিনেমা ‘অশিক্ষিত’তে তিনি আমাকে নায়করাজ রাজ্জাক ভাইয়ের একক ও প্রধান নায়িকা হিসেবে নির্বাচন করেন। ‘অশিক্ষিত’ সর্বশ্রেষ্ঠ দশটি শিক্ষণীয় বাংলা সিনেমার অন্যতম। এতে অভিনয় করা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার। এটি অকল্পনীয় ব্যবসায়িক সাফল্য পেয়েছে। ‘অশিক্ষিত’র প্রতিটি গান বাংলা সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের হৃদয়ে এখনও দোলা দেয়। বিশেষ করে ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে’ এবং ‘আমি যেমন আছি তেমন রবো বউ হবো নারে’ গান দুটি এখনও সবার হৃদয়ে গেঁথে আছে।”

গুণী নির্মাতার প্রয়াণে শোকাহত একসময়ের জনপ্রিয় জুটি নাঈম-শাবনাজ। ফেসবুকে নিজেদের অফিসিয়াল পেজে তারা কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছেন। তাদের বেশিরভাগ ছবির পরিচালক ছিলেন আজিজুর রহমান।

নাঈম-শাবনাজ বলেন, ‘আজিজুর রহমান চলচ্চিত্রের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, একটি প্রতিষ্ঠান, চলচ্চিত্র সম্পর্কে বিষদ জানার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। যিনি একসঙ্গে দু–তিনটি সিনেমায় নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। শুটিংয়ে শান্ত থেকেছেন। তাঁকে কখনো রাগ করতে দেখিনি। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের অহংকার আজিজুর রহমান। তাঁর চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসাসফল হয়েছে। তাঁর প্রতিটি ছবি বাস্তববাদী এবং বক্তব্যধর্মী। তিনি সারাজীবন চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যয় করেছেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো আলোচনায় থাকবে।’

তারকা দম্পতির স্মৃতিতে, ‘আজিজুর রহমান ছিলেন শুটিংয়ে গোছানো মানুষ। সহজেই সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ শেষ করতে পারতেন। কাজের প্রতি এমন নিষ্ঠা ও সততা খুব কম দেখেছি। আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম, যার শূন্যতা পূর্ণ হওয়ার নয়।’

১৪ মার্চ কানাডার একটি হাসপাতালে মারা যান আজিজুর রহমান। তাঁর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল। একবছর ধরে তাকে কৃত্রিমভাবে বাড়তি অক্সিজেন নিতে হতো। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

আজিজুর রহমান ১৯৩৯ সালের ১০ অক্টোবর বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম রূপচাঁন প্রামাণিক। তিনি স্থানীয় আহসানুল্লাহ ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি এবং ঢাকা সিটি নাইট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। চারুকলায় কমার্শিয়াল আর্টে ডিপ্লোমা করেছেন।

অনেক সফল চলচ্চিত্রের পরিচালক আজিজুর রহমান। ১৯৫৮ সালে ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে এহতেশামের সহকারী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ময়মনসিংহের লোককথা নিয়ে ‘সাইফুল মূলক বদিউজ্জামান’ মুক্তি পায় ১৯৬৭ সালে। এরপর ২০১০ সাল পর্যন্ত ৫৩টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘অশিক্ষিত’, ‘মাটির ঘর’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘সাম্পানওয়ালা’, ‘মধুমালা’, ‘সমাধান’, ‘স্বীকৃতি’, ‘অপরাধ’, ‘অতিথি’, ‘জমিদার বাড়ির মেয়ে’, ‘মায়ের আঁচল’, ‘সোনার তরী’, ‘অভিমান’, ‘পরিচয়’, ‘প্রতিদান’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দিল’, ‘জিদ’, ‘লজ্জা’, ‘কথা দাও’, ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’, ‘ডাক্তার বাড়ি’ ইত্যাদি। এছাড়া ১০টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন তিনি।

Advertisement

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ